আতা ইবনে আবী রাবাহ: তাবেঈদের ঈমানদীপ্ত জীবন
"মহান পূর্বসূরীদের জীবন ছিল বাক্য ও সময়ের হিসাব-নিকাশের অনন্য দলিল"
আতা ইবনে আবী রাবাহ ছিলেন বিখ্যাত তাবেঈ। তার ছিলো দুটি অনন্য বৈশিষ্ট্য, যা তাকে দ্বীন ও ইলমের সর্বোচ্চ মর্যাদার শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল—
প্রথম বৈশিষ্ট্য: নফসের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ
নিজের খাহেশাত ও প্রবৃত্তির উপর ছিল তার পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। ফলে নফসকে তিনি কখনই ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় উপভোগের সুযোগ দেন নি।
দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য: সময়ের কঠোর হিসাব
নিজের সময়ের ব্যাপারে ছিলেন এমন কঠোর সচেতন যে অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজে সামান্য সময়ও নষ্ট হতে দেন নি।
"একদিন কুফানগরীর বিশিষ্ট আলিম মুহাম্মদ ইবনে সুকাহ তাঁর দর্শনার্থীদের বললেন—"
ইবনে সুকাহ: "আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কথা শোনাব যার দ্বারা তোমরা হয়ত উপকৃত হবে যেমন আমি হয়েছি?"
দর্শনার্থীগণ: "অবশ্যই।"
ইবনে সুকাহ: "একদিন আতা ইবনে আবী রাবাহ আমাকে বললেন— 'হে ভ্রাতুষ্পুত্র! আমাদের মহান পূর্বসুরীগণ শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কথাই বলতেন এবং শুনতেন। অপ্রয়োজনীয় কথা তারা মোটেও পছন্দ করতেন না।'"
দর্শনার্থী: "চাচা! তাঁদের মতে 'প্রয়োজনীয়' ও 'অপ্রয়োজনীয়' বিষয় দুটোর একটু ব্যাখ্যা দিবেন কি?"
পূর্বসূরীদের "প্রয়োজনীয়" বিষয়ের সংজ্ঞা
- কিতাবুল্লাহ্ তিলাওয়াত ও তার আলোচনা
- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস রেওয়াত এবং তার আলোচনা
- সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ
- ইলমের আলোচনা
- জীবন ও জীবিকা সম্পর্কে অত্যাবশ্যকীয় কথা
"এগুলো ছাড়া আর সবই ছিল তাঁদের কাছে অপ্রয়োজনীয়।"
ইবনে সুকাহ বর্ণনা করেন: "এরপর তিনি আমার মুখের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন— 'তোমরা কি এসব আয়াত অস্বীকার করবে?'"
"অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত রয়েছেন।
সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ।"
— সূরা ইনফিতার: ১০-১১
— তাবেঈদের ঈমানদীপ্ত জীবন থেকে সংগৃহীত
0 Comments